২০১১ সালের কথা,  আমাদের ৩০ মিনিটের ছোট ট্রেনের ছোট্ট যাত্রা শেষ হল পাচুন্দি স্টেশনে এসে, স্টেশনে নাম লেখা পাচন্দি। অখ্যাত সেই পরিত্যক্ত স্টেশনটা পরে কিছুদিনের জন্য কুখ্যাত হয়েছিল, সংবাদপত্রে সে খবর পড়েছিলাম। আমরা সে সময়ে পেয়েছিলাম বড় বড় আম গাছে ঘেরা ছোট্ট একটা পরিত্যক্ত স্টেশন, বন্ধ টিকিট কাউন্টার, সময়ও যেন সেই ১০০ বছর আগে থমকে রয়েছে, তপ্ত দিনেও সুন্দর ছায়া সুনিবিড়, শীতল। স্টেশনে বন্ধুও জুটে গেল, কয়েকটি সারমেয়, সকালের খাবার তাদের সঙ্গে ভাগ করে খেয়ে ও তাদের সঙ্গে খানিকক্ষন সময় কাটিয়ে, ছোট ট্রেন ও স্টেশনকে বিদায় জানিয়ে আমরা রওনা দিলাম গ্রামের পথে।
গ্রামের মেঠো পথ ধরে চলতে চলতে পথে পড়ল পাচুন্দি হাট, সে দিন হাটবার নয় অনেকটা জায়গা নিয়ে হাটের সারিসারি চালা গুলো সব শুনশান করছে, ইতস্তত দু একজন চালা সারাতে ব্যস্ত শুধুমাত্র একটা মিষ্টির দোকান খোলা, দোকানের ভিতরের প্রায় বিবর্ণ বোর্ডে নাম দেখলাম কল্যানী মিষ্টান্ন ভাণ্ডার। তখন জানতাম না ফিরে আসার অনেক পরে শুনেছিলাম এই পাচুন্দি হাট সম্ভবত এশিয়ার সব থেকে প্রাচীন গরুর হাট। যাইহোক বাইরের লোক দেখে মিষ্টির দোকানের ভদ্রলোক নিজেই এগিয়ে আসলেন আলাপ করার জন্য। আমরাও খুশি হয়ে ওনার সঙ্গে গল্প করতে লাগলাম সঙ্গে জেনে নিলাম আশেপাশে আর কি দেখার আছে আর শুনে নিলাম পথনির্দেশ। ওনার দোকানের শোকেসে রসগোল্লা, ছানার গজার সঙ্গে আর একটা মিষ্টি দেখতে অচেনা লাগছিল, নাম জিজ্ঞেস করতে বললেন মণ্ডা, শুনেই মনটা ছোট বেলার মত নেচে উঠল। কত প্রবাদ বাক্য, কত গল্পে পড়া মণ্ডামিঠাই এভাবে চোখের সামনে পেয়ে যাবো ভাবিনি। সবাই খেয়ে দেখলাম, চিনির পরিমান অনেকটাই বেশী তবুও আস্বাদের থেকে বড় হয়ে উঠল আমাদের মনের আনন্দটা।

About Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *