আপনার সুগারের কোন সমস্যা নেই তো ? আজ যে মেলার কথা শোনাবো সেই মেলায় ঘুরতে গেলে সুগারের সমস্যা থাকলেও অসুবিধা নেই কিন্তু মেলার বৈশিষ্ট একা একা চেখে দেখতে যাওয়া কিন্তু একটু হলেও ঝুঁকির। আমি পাণ্ডুয়ার পেড়োর মেলার কথা বলছি, গেছিলাম সেই ২০১৬ সালে কিন্তু নানা কারনে সে অভিজ্ঞতার কথা আর কাউকে বলা হয়ে ওঠেনি, আজ বারাসাতে প্রকারান্তর লকডাউনের কারনে পুরনো ছবি দেখতে বসে হটাৎ করেই মনে পড়ে গেল।
মেলার কথা শোনার আগে একবার সংক্ষেপে পাণ্ডুয়ার ইতিহাসটা বলি, ত্রয়োদশ শতকের প্রথম দিকেও পাণ্ডুয়া ছিল হিন্দু রাজাদের শাসনাধীন। সম্রাট শাহ সুফিউদ্দিনের কাছে পান্ডু রাজার পরাজিত হবার পর এই অঞ্চলে মুসলিম আধিপত্য শুরু হয়। এই মুসলিম বিজয়ের স্মরণে প্রাচীন কাল থেকেই ১লা মাঘ এখানে একটা মেলা সংগঠিত হয়ে আসছে, নাম মাঘ মেলা হলেও মুখে মুখে এর নাম আজ পেড়োর মেলা।
এবার আসি পেড়োর মেলার কথায় হাওড়া-বর্ধমান মেন লাইনে পাণ্ডুয়া স্টেশনে নেমে মেলার মাঠ একটু খানি যেকোন টোটোকে মেলাতলা বললেই হবে, মিনার তো বাইশ দরওয়াজা মসজিদ সংলগ্ন মাঠেই বসে এই মেলা। মুসলিম বিজয় স্মরণীয় করে রাখতে মেলা হলেও আজ এই মেলা সব ধর্মের মানুষের মিলন মেলা। মেলার এক পাশ থেকে যেমন ভেসে আসে শিক কাবাব, লাচ্ছা পরোটা, বিরিয়ানীর জিভে জল আনা গন্ধ আর একপাশ থেকে তখন ভেসে আসে বাদাম ভাজা আর গরম জিলিপির সুবাস, সব মিলেমিশে একটা মেলার মেজাজ।
এই সব বলতে গিয়ে ভাবছেন আমি মেলার বৈশিষ্টের কথা ভুলে গেলাম কিনা, মোটেই না, এই মেলার আসল বৈশিষ্ট যে নোড়া পান্তুয়া, হ্যাঁ ঠিকই পড়লেন নোড়া পান্তুয়া এক কালে শীল-নোড়ার নোড়ার সাইজের পান্তুয়া হত তাই ওই নাম, এখন যুগের সঙ্গে তাল মেলাতে গিয়ে আকারে একটু ছোট হলেও প্রায় ফুট খানেক আর গায়ে গতরেও বেশ। সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ভীম আকৃতির গজা। আকৃতি বিশাল হলেও দুইয়েরই স্বাদ কিন্তু অপূর্ব, এত বছর পরেও এখনো মুখে লেগে আছে। কি ভাবছেন ? যাবেন নাকি একবার ? পরে দোষ দেবেন না, আমি কিন্তু আগেই সাবধান করে রেখেছি।